করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের শিশু বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ভাবছে সরকার

মরনঘাতী করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের শিশু বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ভাবছে সরকার। এ বিষয়ে রোববার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের শিশু অধিকার কমিটি একটি বৈঠকও করেছে। বৈঠকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের শিশুদের সহজ আইনগত সহায়তা ও তাদের জামিনের আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরে তারা প্রধান বিচারপতি বরাবর একটি সুপারিশ পাঠিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি অনুমোদন দিলে আর সবকিছু ঠিক থাকলে দেশের তিনটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রায় সহস্রাধিক শিশু বন্দিও জামিনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রয়োজনের তুলনায় কম জায়গায় গাদাগাদি করে থাকা শিশু বন্দিরা করোনা আক্রান্ত হতে পারেন এই আশঙ্কা থেকে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোববার নিজ নিজ বাসা থেকে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন শিশু অধিকার কমিটির চেয়ারম্যান ও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, কমিটির সদস্য বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, জনসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম ও ইউনিসেফের প্রতিনিধি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এম এম মাহমুদুল্লাহ বলেন, আইনের সংঘাতে জড়িত সারা দেশের এমন ১ হাজার ১৪০ জন শিশু আমাদের তিনটি উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে। সুপ্রিম কোর্টের শিশু অধিকার কমিটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের আইনগত সহায়তা ও জামিনের বিষয়ে কথা বলেছেন। এখন প্রধান বিচারপতির অনুমোদনের অপেক্ষা করা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি অনুমোদন দিলেই তাদের জামিনের বিষয়ে চিন্তা করা হবে।
এক্ষেত্রে শিশুদের মামলার ক্যাটাগরি অনুসারে জামিন বিবেচনা করা হবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরসূত্রে জানা গেছে, দেশের তিনটি কিশোর/কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে বর্তমানে সংখ্যা ১ হাজার ১৪০ জন শিশু বন্দি আছে। এর মধ্য গাজীপুরের টঙ্গীতে ৩০০ আসনের জাতীয় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে ৬৯৪ জন শিশু। গাজীপুরের কোনাবাড়ির ১৫০ আসনের জাতীয় কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে ১১৪ শিশু আর যশোরের পুলেরহাটের ১৫০ আসনের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে ৩৩২জন শিশু।
এসব শিশুরা বিভিন্ন সময় ফৌজদারি অপরাধ করেছিলো। তাই শিশু আদালত সংশোধনের জন্য তাদেরকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। কিন্তু শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। অপর্যাপ্ত জায়গায় বিপুল সংখ্যক শিশু রয়েছে। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করে কেন্দ্রগুলো।